কোঁকড়ানো চুলের যত্নের অব্যর্থ১২ টি উপায়::ছেলে ও মেয়ে উভয়ের জন্য । । 12 Easy curly hair care pro tips for Bengali Curly Hair Girls and Boys

কোঁকড়ানো চুলের যত্নের অব্যর্থ১২ টি উপায়:ছেলে ও মেয়ে উভয়ের জন্য । । 12 Easy curly hair care pro tips for Bengali Curly Hair Girls and Boys

Bengali curly hair girl and boy
আপনার কি আমার মতো ন্যাচারাল কোঁকড়ানো চুল?(Bengali curly hair)এবং চুলের ন্যাচারাল কার্ল বজায় রাখতে চান তাহলে এই প্রতিবেদন টি আপনার জন্য। কোঁকড়ানো বা ঢেউ খেলানো(Wavy) চুলের প্রধান সমস্যা খুব সহজেই ময়শ্চার হারিয়ে ফেলা। ফল স্বরূপ রুক্ষ, এলোমেলো চুল। বার বার শ্যাম্পু করা ,বার বার চুল ভেজানো, চুলে অতিরিক্ত হেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার এসব চুলের ন্যাচারাল ময়শ্চার নষ্ট করে চুলকে রুক্ষ করে। কার্লি হেয়ার চিরুনি করা খুবই কষ্টের এবং মেন্টেন করা খুবই কষ্টের হয়ে পড়ে(kokrano chuler jatno)। তাছাড়া পলিউশন, পরিবেশের ময়শ্চার, ধুলো বালি, চুলকে ড্যামেজ করে। 
এমনকি আমিও একসময় এই সমস্যায় ভুগেছি। প্রায় একবছর ধরে বিভিন্ন টেকনিক ও প্রোডাক্ট ট্রাই করেছি। এখন আমার চুল খুবই সফ্ট এবং ম্যানেজেবল। ইজিলি এখন আমি চুলের ন্যাচারাল কার্ল মেন্টেন করতে পারি। আপনিও কি এরম সফ্ট ও ন্যাচারাল কার্লি চুল সবদিনের জন্য পেতে চান। Then don’t worry! Your Solution is here.
জাস্ট নিচে দেওয়া টিপস ফলো করুন(Hair care for curly hair)। আপনার কার্লি চুলের সব সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।

১.অতিরিক্ত শ্যাম্পু করবেন না 

শ্যাম্পু চুলের নোংরা ,ধুলো  বালি পরিষ্কার করার জন্য অবশ্যই দরকার কিন্তু অতিরিক্ত শ্যাম্পু ব্যবহার কোঁকড়ানো চুলের জন্য একদমই উচিত না। যখন আপনার মনে হবে যে চুল খুবই নোংরা হয়েছে বা অনেক বেশি প্রোডাক্ট ব্যবহার করে ফেলেছেন তখন শ্যাম্পু করবেন।সপ্তাহে ১ দিন বা ১০ দিনে ১ বার শ্যাম্পু করবেন। অতিরিক্ত শ্যাম্পু চুলের ন্যাচারাল ময়শ্চার নষ্ট করে ,চুল রুক্ষ করে তোলে। এবং মনে রাখবেন শ্যাম্পু করার সময় স্ক্যাল্প ভালো করে আঙ্গুল দিয়ে ঘষে পরিষ্কার করবেন। স্ক্যাল্প পরিষ্কার না থাকলে চুলের গোড়া থেকে ন্যাচারাল অয়েল চুলের ডোগা অবধি পৌঁছতে পারবেনা।  

২.সঠিক শ্যাম্পু ব্যাবহার করুন

যে ভুলটা আমি এতো দিন ধরে করতাম। লেবেল বা ইনগ্রেডিয়েন্টস না পড়ে যখন যে শ্যাম্পু ভালো মনে হয়েছে ব্যবহার করেছি।ফল সরূপ রুক্ষ এলোমেলো চুল। শ্যাম্পু কেনার সময় সবসময় শ্যাম্পুতে কি রয়েছে ভালো করে পড়ে তবেই নেবেন। শ্যাম্পুতে থাকা প্যারাবিন , সালফেট , অ্যালকোহল কোঁকড়ানো চুলের জন্য একদমই উপযুক্ত নয় শ্যাম্পুতে থাকা এই সব পদার্থ কোঁকড়ানো চুলের জন্য  অনেকটা  ডিটারজেন্টের মতো কাজ করে। তাই যে শ্যাম্পুতে এই সব রয়েছে সে শ্যাম্পু আপনার জন্য নয়। 
বরং সেই সব শ্যাম্পু চুজ করুন যার মধ্যে অলিভ অয়েল , কোকোনাট অয়েল ,এলোভেরা ,শিয়া বাটার ,হাইড্রোলাইজ  সিল্ক(Hydrolyzed silk ), প্যান্থানল (Panthenol), প্রো ভিটামিন ইত্যাদি  রয়েছে।  
কোঁকড়ানো চুলের জন্য আলাদা করে স্পেশাল শ্যাম্পু পাওয়া যায় যেগুলো শুধু মাত্র কোঁকড়ানো চুলের জন্য। এই সব শ্যাম্পু খুব মাইল্ড হয়।আমার মতে সেই সব শ্যাম্পুই ব্যবহার করুন(Curly hair products)। যদিও কোঁকড়ানো চুলের জন্য যে কোনো শ্যাম্পুর দাম সাধারণ শ্যাম্পুর তুলনায় বেশি ,কাজ কিন্তু সেরকমই ভালো। 

L’Oreal Paris               TRUE FROG            Curl Up Curl               StBotanica

 EverCurl                      CURLS                          Moisturising                 Go Curls 
Shampoo                      SHAMPOO                   Shampoo                Shampoo

Buy Here   Buy Here    Buy Here       Buy Here

কনন্ডিশনার  ব্যবহার করুন 
কোঁকড়ানো চুলে কন্ডিশনার আপনাকে অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে। কিন্তু সঠিক কন্ডিশনার বেছে নেওয়াটাও জরুরি। সাধারণ কন্ডিশনারে থাকে প্যারাবিন ,সিলিকন, সালফেট ,অ্যালকোহল এই সব পদার্থ,যা কোঁকড়ানো চুলের জন্য আদৌ ভালো না। এখন থেকে কন্ডিশনার কেনার আগে দেখে নেবেন এসব আছে কিনা।সিলিকন চুলের ওপর প্রলেপ তৈরী করে যা ধোয়ার পরেও যায়না।ফলে বার বার ব্যবহার করলে প্রলেপের ওপর প্রলেপ পড়তে থাকে এবং কিছুদিন পর প্রত্যেকটি  চুল খুব মোটা ও নোংরা বলে মনে হতে থাকে। এরপর আপনি বাইরে থেকে যাই লাগাননা কেন চুলের ভেতর অবধি পৌঁছায় না।কিছুদিন পর চুল খুব রুক্ষ শুষ্ক হয়ে পড়ে। তাই সঠিক কন্ডিশনর কিনুন। কোঁকড়ানো চুলের জন্য আলাদা কন্ডিশনার পাওয়া যায় সেগুলো ব্যবহার করতে পারেন বা অন্য নরমাল কন্ডিশনার ব্যবহার করতে পারেন কিন্তু কোনো ক্ষতিকর ক্যামিক্যাল যেন না থাকে সেটা অবশ্যই  দেখে নেবেন। 
                   

StBotanica GO           Ashba Botanics               Curl Up Curl 

Curls Conditioner     Leave-in Conditioner    Hydrating Conditioner
 Buy Here      Buy Here         Buy Here  

৪.শ্যাম্পু করার আগে চুলের সঠিক পরিচর্যা

কার্লি চুল মেনটেন করার এটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্টেপ। শুধু আমি না কোঁকড়ানো চুলের অধিকারী অনেকেই মনে করেন কার্লি চুল মেনটেন করার জন্য এটার বিকল্প হয়না। শ্যাম্পু করার আগে শুকনো চুলে কন্ডিশনার বা ভালো করে তেল লাগান। এটা হয়তো শুনে অবাক হতে পারেন যে শ্যাম্পুর আগে কন্ডিশনার লাগাবো। কিন্তু জাস্ট একবার ট্রাই করে দেখুন, এটার মতো ভালো আর কিছু হয়না। চুলকে আঙ্গুল দিয়ে পার্টে  পার্টে করুন ও প্রতিটি ভাগে ভালো করে কন্ডিশনার লাগান।চিরুনি করবেন না।মাথায় একটা প্লাস্টিকের ক্যাপ লাগান বা তোয়ালে জড়িয়ে নিন ,যাতে তাপের সৃষ্টি হয় ও চুলের গোড়া গুলো খুলে কন্ডিশনার ভেতর অবধি প্রবেশ করে।২০ থেকে ২৫ মিনিট অপেক্ষা করুন।কোনো মাইল্ড শ্যাম্পু  দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। 
এটা আপনার চুলকে নরম , মোলায়েম ও চুলে জট পড়া থেকে মুক্তি দেবে।

Curly hair products


৫.চুলে চিরুনি না করাই ভালো 

শুনে হয়তো অবাক লাগতে পারে কিন্তু কোঁকড়ানো চুলে চিরুনি না করাই ভালো।চিরুনি করলেও সাধারণ চিরুনি দিয়ে চিরুনি করবেন না। এতে জট ছাড়াতে অসুবিধে হবে ও চুল ছিঁড়ে যাবে।কোনো বড়ো দাঁড়াওয়ালা চিরুনি দিয়ে চিরুনি করতে পারেন। চুল যখন একদম ভেজা তখনি চিরুনি ব্যাবহার করুন বা আঙ্গুল দিয়ে আঁচড়ে নিন। যেহেতু ভেজা চুল উঠে যাওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি তাই ধীরে সুস্থে আঙ্গুল দিয়ে আঁচড়ে নিন। চুল টানাটানি করে জট ছাড়াবেন না। 

৬.চুলে হিট ট্রিটমেন্ট করবেন না 

চুলে হিট ট্রিটমেন্ট যেমন হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার , স্ট্রেটনার , বা  হেয়ার কার্লার ব্যবহার একদমই করবেন না। কোঁকড়ানো চুলে হিট ট্রিটমেন্ট চুলের স্বাভাবিক অয়েল, নমনীয়তা ও স্বাভাবিক প্যাটার্ন নষ্ট করে।চুল রুক্ষ ও নিস্তেজ হয়ে পড়ে। 
যদি আপনাকে নিতান্তই হিট ট্রিটমেন্ট করতে হয় তাহলে ভালো মানের হিট প্রোটেকটেন্ট স্প্রে (Heat protectant spray) ব্যবহার করবেন , যা চুলকে অতিরিক্ত ক্ষতির হাত থেকে বাঁচাবে। 

৭.চুল কখনো গরম জলে ধোবেন না 

কোঁকড়ানো চুল কখনো গরম জল দেবেন  না।  গরম জল চুলের ন্যাচারাল ময়শ্চার ও নমনীয়তা নষ্ট করে। ফলে চুল শুকনো , প্রাণহীন , রুক্ষ দেখায়। চুল সবসময় ঠান্ডা জলে ধোবেন ,তা সে যতই শীতকাল আসুক। 
৮.চুলের ডোগা ট্রিম করতে ভুলবেন না
 প্রত্যেক ২ থেকে ৩ মাস অন্তর চুলের ডোগা কেটে ফেলুন। চুলের ডোগা ফেটে গেলে তাকে কেটে ফেলা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। চুলের ডোগা যাতে না ফাটে তার জন্য নিচের টিপস গুলি মেনে চলুন 
  • চুল শুকনো অবস্থায়  কখনোই আঁচড়াবেন না। 
  • চিরুনি করার সময় টানা টানি করে জট ছাড়াবেন না। 
  • চিরুনি সবসময় চুলের ডোগা থেকে গোড়া অবধি করুন। 
  • চুল কখনোই টাইট করে বাঁধবেন না। 
  • কোঁকড়ানো চুলের জন্য সঠিক চিরুনি ব্যাবহার করুন। 

৯.কোঁকড়ানো চুলে সঠিক হেয়ার মাস্ক লাগান

কোঁকড়ানো চুলের জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন প্রোটিন ও কেরাটিন। আপনি পার্লারে এই দুটি ট্রিটমেন্ট করতে পারেন। অথবা প্রোটিন ও কেরাটিন যুক্ত হেয়ার মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন। 
বাড়িতেও আপনি হেয়ার মাস্ক বানাতে পারেন। একটি ডিম, ১ চামচ অলিভ অয়েল, ও মেয়োনিজ একসাথে মিশিয়ে মাথায় লাগান। আধ ঘন্টা পর কোনো মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন।
                           

Luxura Sciences           StBotanica Pro-Keratin          Curl Up Intense

Collagen Hair Mask         & Argan Oil Hair Mask          Hydrating Hair Mask  
Buy Here                 Buy Here               Buy Here
১০.স্নানের পর চুল সঠিক ভাবে মুছুন 
স্নানের পর ভেজা চুল সঠিক ভাবে মুছুন।  কোঁকড়ানো চুল মোছা মানে কিন্তু ঘষে ঘষে মোছা নয়। মাইক্রো টাওয়েল বা সিম্পলি গামছা বা কোনো নরম সুতির কাপড় দিয়ে চুল মুঠো করে করে অতিরিক্ত জল বের করে দিন। কখনোই ঘষবেননা  বা ঝাড়বেন বা রোগড়াবেন না। নাহলে চুলের ন্যাচারাল কোঁকড়ানো প্যাটার্ন নষ্ট হয়ে যাবে ও চুল এলোমেলো হয়ে হবে। 
১১.চুলে তেল ম্যাসাজ করুন 
চুল কোঁকড়ানো হোক বা সোজা চুলের সঠিক বৃদ্ধির জন্য তেল লাগানো খুবই জরুরি। তেল ম্যাসাজ চুলে পুষ্টি যোগায়,মাথায় রক্ত চলাচল বৃদ্ধি করে চুলের  বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। 
নারকেল তেল কোঁকড়ানো চুলের জন্য খুই ভালো। যেকোনো পাতলা ,চটচটে ভাব বিহীন নারকেল তেল ব্যবহার করুন।  রাতে চুলে তেল লাগিয়ে পরের দিন দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন স্নানের অথবা স্নানের ১ ঘণ্টা আগে তেল মেখেও শ্যাম্পু করতে পারেন। 
নারকেল তেল ছাড়াও অলিভ অয়েল ব্যবহার করতে পারেন।চেষ্টা করবেন এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল ব্যাবহার করতে। অলিভ অয়েল চুলকে মসৃন করে ও পুষ্টি  যোগায়।এক চামচ অলিভ অয়েল নিয়ে হালকা গরম করে নিন। মাথায় আঙ্গুল দিয়ে গোল গোল করে ঘষে ম্যাসাজ করুন। ১ ঘন্টা রাখুন ও যে কোনো মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। 
ক্যাস্টর অয়েল বা রেড়ির তেলও  ব্যবহার করতে পারেন। এটা চুলকে খুবই নরম করে ,মোলায়েম করে তোলে ও ময়শ্চারের যোগান দেয়। 
ওপরে বলা যেকোনো তেল ব্যবহার করতে পারেন। অথবা আমার মতো কয়েকটি তেল মিশিয়েও ব্যবহার করতে পারেন। ১ চামচ এক্সট্রা ভার্জিন অলিভ অয়েল ,১ চামচ এক্সট্রা ভার্জিন নারকেল তেল ও ১/২ চামচ ক্যাস্টর অয়েল মিশিয়ে হালকা গরম করে চুলে ম্যাসাজ করে নিন ও ১ ঘন্টা পর শ্যাম্পু করে নিন(Natural hair products for curly hair)। এই তেলের মিশ্রণ টা আমার পার্সোনাল ফেভারিট। 
Hair care for curly hair
১২.রাতে চুলের যত্ন 
রাতে চুল খুলে কখনো ঘুমোবেন না। ঘুমোতে যাওয়ার আগে সব চুল মাথার ওপর তুলে একটা লুজ পনিটেল বাঁধুন।এতে চুলের কোঁকড়ানো ভাব নষ্ট হয়না।পরের দিন আর আপনাকে নতুন করে চুলের কোঁকড়ানো ভাব বজায় রাখার জন্য প্রোডাক্ট ব্যবহার করতে হবে না। রাতে বা  দিনে কখনোই  চুল খুব টাইট করে বাঁধবেন না।এতে আপনার চুলের স্বাভাবিক কোঁকড়ানো প্যাটার্ন বজায় থাকবে।  
ঘুমোনোর জন্য বালিশের সুতির কভার ব্যবহার করবেন না।সুতি রাতে চুলের স্বাভাবিক ময়শ্চার ও অয়েল শুষে নেয়। ফলে চুল রুক্ষ ও এলোমেলো হয়ে যায়।সুতির পরিবর্তে সাটিন বা সিল্কের কভার ব্যবহার করুন।চুল ভালো থাকবে। 
শেষকথা 
কোঁকড়ানো চুল ভালো করে যত্ন করল দেখতে খুবই সুন্দর লাগে। এখন থেকেই যত্ন করা শুরু করে দিন। আর হ্যাঁ ,ধৈর্য ধরুন। একদিনে চুল ঠিক হয়ে যাবেনা। অন্তত কমপক্ষে ৩ মাস আপনাকে এই রুটিন ফলো করতে হবে। আর আপনার কোঁকড়ানো চুল ,সোজা চুলের সাথে তুলনা করবেন না। নিজের কোঁকড়ানো চুলকে ভালোবসুন ও যত্ন নিন। 
এই প্রতিবেদন টি ভালো লাগলে শেয়ার করুন। আর আপনার কোনো প্রশ্ন বা মতামত থাকলে নিচে কমেন্ট বক্সে জানান। 
     
Image Credit- Racool_studio/freepik
 

   




























 
 

  


   

Recommended Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published.